আমরা সকলেই চা পান করতে অধিক পছন্দ করি। চা ছাড়া আমাদের সকালটাই যেন মাটি। চা পান দিয়েই শুরু হয় আমাদের ভোর। তবে এই চা পানেরও কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা বিদ্যমান৷ আর এই উপকারিতার কথা চিন্তা করেই আমাদের অনেকের পছন্দ ভেষজ চা।
আমরা সকলেই জানি বাজারে নানানরকমের ভেষজ চা পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে বাজারে বিক্রয়কৃত ভেষজ চায়ের চেয়ে বাসায় তৈরি করে নেওয়া ভেষজ চায়ের উপকারিতা অনেক। আপনারা হয়তো জানেন ভেষজ চায়ের মধ্যে অন্যতম একটি হলো তুলসি চা। আয়ুর্বেদে তুলসীকে ভেষজের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা সকলেই জানি বহুবিধ ব্যবহারের জন্য তুলসি পাতাকে বলা হয় ঔষধি গাছের রাণী।
বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাবো তুলসী চায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি এটি আপনাদের উপকারে আসবে। তুলসী চা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আমার সাথেই থাকবেন।
তুলসী চায়ের উপকারিতা
মৌসমের পরিবর্তনে আমাদের অনেকরই ঠান্ডা, জ্বর সর্দি প্রায় সময় হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে তুলসী চা আমাদের খুব সহজে সুস্থ হতে সহায়তা করে থাকে। তুলসী চা সর্দি, ঠান্ডা, কাশি এবং জ্বর থেকে স্বস্তি দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্যের আরো নানান উপকার সাধন করে থাকে। তো বন্ধুরা চলুন এবার আমি আপনাদের তুলসী চা পানের কিছু চমকপ্রদ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের জানাই।
শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে- তুলসী চা আমাদের শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে৷ তুলসী চা পানে আমাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকাংশই দূরীভূত হয়। এই চা হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস এবং সাধারণ সর্দি, কাশি থেকেও আমাদের স্বস্তি দেয়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
মানসিক চাপ কমায়- একাধিক গবেষণায় ইতোমধ্যে দেখা গিয়েছে তুলসী চা শরীরের কর্টিলস হরমোনের (স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা কমায় যা আমাদের মানসিক চাপের পাশাপাশি উদ্বেগ কমাতেও অনেক সহায়তা করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে তুলসী চা- আমাদের শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে তুলসী চা অনেক সাহায্য করে। এটি কার্বোনহাইড্রেট এবং প্যাটের বিপাককে আরো সহজ করতে সহায়তা করে থাকে।
দাঁত এবং মৌখিক স্বাস্থ্য রক্ষায় তুলসী চা- তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। নিয়মিত তুলসী চা পান করলে আমাদের মুখের ক্ষতিকারক এবং ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু দূর হয়৷ আমরা জানি তুলসী চা মাউথ ফ্রেশনার হিসেবেও কাজ করে এবং আমাদের নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ কমাতেও সাহায্য করে।
তুলসী চা যেভাবে তৈরি করবেন
তুলসী চা তৈরি করা খুব সহজ কাজ। প্রথমে আপনাদের যা করতে হবে তা হলো একটি প্যানে এক কাপ পানি নিয়ে তাতে ২ কিংবা তুলসী পাতা নিয়ে তা ফুটিয়ে নিন। প্রায় তিন থেকে চার মিনিট পর একটি পাত্রে চা ছেঁকে নিন। আপনি চাইলে এভাবেই চা পান করতে পারেন। স্বাদে ভিন্নতা পেতে বা আরো বেশি স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে এক চামচ মধু এক আধা চামচ লেবুর রস যোগ করে নিতে পারেন। আর আপনি চাইলে চা তৈরি করার সময় এলাচ এবং আদা যোগ করে নিতে পারেন।
[★★] দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে চোখ রাখলে পানি আসে কি?
[★★] ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খাদ্য তালিকা
[★★] লিভার রোগীর জন্য খাদ্য তালিকা
তুলসী চায়ের অপকারিতা
তুলসী চায়ের যেমন কিছু উপকারিতা রয়েছে তেমনই রয়েছে বেশ কিছু অপকারিতা। ওয়েবএমডির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তুলসী চা সকলের জন্য উপকারী নয়। নিচে আমি জানাচ্ছি তুলসী চা কাদের জন্য অপকারিতা বয়ে আনে।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় তুলসী চা পান করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা তা পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সম্ভাব্য যেকোনো নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে , আপনি যদি গর্ভবতী বা আপনার সন্তানকে বুকের দুধ পান করানো অবস্থায় থাকেন তবে তুলসী চা পান করবেন না।
কিছু বিশেষজ্ঞদের মতানুসারে প্রজনন ক্ষমতায় ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে তুলসী পাতা। তাই আপনি এবং আপনার সঙ্গী যদি সন্তান গ্রহণের চেষ্টা করেন তাহলে তুলসী চা এড়িয়ে চলাই ভালো। শুক্রাণুর সংখ্যা এবং গতিশীলতার উপর এই ভেষজ পাতাটির প্রভাব নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও পুরোপুরি ভাবে নিশ্চিত হতে পারেননি।
আপনি যদি রক্ত পাতলা করার ঔষধ খেয়ে থাকেন তবে অবশ্যই তুলসী চা পানে সাবধান হোন। কারণ তুলসী আমাদের শরীরের রক্তকে পাতলা করতে সাহায্য করে। দুটি একত্রে খেলে রক্ত অতিরিক্ত মাত্রায় পাতলা হয়ে যেতে পারে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
তুলসীর পাতার মতো ভেষজ যেহেতু আমাদের শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতাকে ধীর করে দিতে পারে তাই আমাদের শরীরে অস্ত্রোপাচারের পূর্বে তুলসী চা এড়িয়ে চলাই অনেক ভালো।
[★★] দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে চোখ রাখলে পানি আসে কি?
[★★] ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খাদ্য তালিকা
[★★] লিভার রোগীর জন্য খাদ্য তালিকা
তো বন্ধুরা আজকের এই লেখাটি এই পর্যন্ত। আশা করছি আপনারা মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেলটি পড়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলটে অবশ্যই আপনাদের জীবনে কাজে লাগবে। আমার এই লেখাটি কেমন লেগেছে তা নিচে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। প্রতিদিন এমন নতুন নতুন বিষয় জানতে আমাদের আজকের ব্লগ ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করবেন। এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Post a Comment